Friday, February 19, 2016

সত্য উন্মোচিত হোকঃস্বাধীনতার পূর্ব কথা

সত্য উন্মোচিত হোকঃ
=========================================
১৯৬২ সাল ; ২০ অক্টোবর

যুদ্ধে জড়িয়ে পরে সোসালিস্ট চায়না এবং ইন্ডিয়া। ২৮ অক্টোবর ইউ এস প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি চিঠি লিখলেন আইউব খাঁনকে। “কমিউনিস্ট চায়নাকে রুখতে ইন্ডিয়ার সহযোগিতাতে এগিয়ে আসুন“।

এই আহ্বানের মাধ্যমে, প্রকারান্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট, আইউব খানকে সমাজতান্ত্রিক চায়নার বিরুদ্ধে ভারতের পক্ষে শান্তি চুক্তিতে আসার জন্য চাপ প্রয়োগ করে যা সামরিক গাঁটছড়া বাঁধার নামান্তর। স্বভাবিক ভাবেই আইউব খান মার্কিনমুলুকের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।

এই প্রস্তাব প্রত্যাক্ষানের ক্ষেত্রে আরো একটা নিয়ামক ছিল রাশিয়া। কোল্ড ওয়ার যুগে রাশিয়ার পাশে বসবাস করে রাশিয়ার রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ানো সহজ কথা নয়।

পেশোয়ারের বাটাভ এলাকাতে ছিল সিআইএ এর গোপন বিমান ঘাঁটি। U-2 নামের মার্কিন গোয়েন্দা বিমান এই ঘাঁটি থেকেই সোভিয়েটদের উপর নজরদারী চালাতো। সোভিয়েট মিসাইল পাইলট গ্যারি পাওয়ার, U-2 বিমান কে ভুমিতে নামিয়ে আনেন এবং ততকালীন সোভিয়েট প্রাইম মিনিস্টার নিকিতা ক্রুসচেভ পাকিস্থানকে এই মর্মে হুশিয়ার দেন যে

, ““পেশোয়ারের বাটাভেতে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটি, রুশ মিসাইলের নাগালের ভেতরেই আছে।”

গোদের উপর বিষ ফোঁড়া ; পাকিস্থানের জন্য। আইউবকে বাধ্য হয়ে বাটাভে সিআইএ ঘাঁটি বন্ধ করে দিতে হয়, মার্কিনিদের রুষ্ট করে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আইউব খান বিদেশ নীতিতে সোভিয়েট অনুবীজ বপন করেন , নিজের অজান্তেই।
কাল ক্ষেপণ না করেই সিআইএ সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয় "আইউব খাঁনকে সরে যেতেই হবে”। মার্কিন পক্ষ দুটি নকশা তৈরি করে আইউবের জন্য।
প্রথমটি সামরিক, দ্বিতীয়টি রাজনৈতিক।

১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধ হচ্ছে সেই সামরিক চাপ। অবশ্য সামরিক চাপ ব্যার্থ হলে রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগের ছক কেটে রাখা হয়। ৬৫ এর ইন্দো-পাক যুদ্ধ সামরিক চাপ হিসাবে চরম হলেও , উদ্দেশ্য পূরনে ব্যার্থ হয়ে যায়, অর্থাৎ আইউব বহাল তবিয়তে ক্ষমতাতে থেকে যান।

কারন এর আগেই পাকিস্থান গোয়েন্দা সংস্থার হল্যান্ডের ডুয়েল এজেন্ট ন্যাটোর এক উচ্চপদস্থ জেনারেলের মাধ্যমে পাকি রাষ্ট্রদূত কুদরৎ উল্লাহ শেহাব নিশ্চিত খবর দেন যে,

“এশিয়াতে দুটি ঝড় আসছে সিআইএ'র হাত ধরে, একটি ইন্দোনেশিয়াতে অন্যটি পাক-ভারত সীমান্তে”।


অবশ্য জেনারেল আইউব সেই আশংকাকে নিজের ক্ষমতার জন্য হুমকি মনে করেন নি। কারন "ম্যাগ" নামের মার্কিন সামরিক স্ট্রাটেজি মেকারদের অফিস ছিল পাকিস্থানে। ম্যাগ এর পূর্ন অর্থ হচ্ছে "Military Assistance Advisory Group" যারা একটি সামরিক উপদেষ্টা পরিষদ, এরা পাকিস্থানের অনুমতি নিয়েই পাকিস্থানে কাজ করতো।

সিআইএ নকশা অনু্যায়ি, যুদ্ধ বাধিয়ে দিয়ে ইন্ডিয়া-পাকিস্থানের সামরিক বাহিনীকে ফেস টু ফেস সমরে বাধ্য করা। আমেরিকানদের বিশ্বাস ছিল সামনাসামনি যুদ্ধে পাক আর্মি পরাজিত হবেই। সেক্ষেত্রে পরাজয়ের নায়ক হিসাবে আইউব খানকে পদত্যাগ করতেই হত।

যুদ্ধে পাকিস্থানীরা যখন নাকাল হচ্ছে তখন ম্যাগ আইউব খানকে উপদেশ দেয় যে, “Mr.President the Indians have caught you by neck, if you want us, we can help in releasing the grip.” এবার আইউব ধরতে পারলেন আমেরিকান চালাকি, যে ম্যাগ, ইচ্ছাকৃত ভাবেই পাকিস্থানকে জটিল যুদ্ধ জালে জড়িয়ে ফেলে পরাজয়ের বৃত্তে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।

সাথে সাথেই ম্যাগ এর হাত থেকে কমান্ড নিজ হাতে তুলে নিলেন আইউব খাঁন। সবচেয়ে পিছনে থাকা বেঙ্গল রেজিমেন্টকে ঘুড়িয়ে দিলেন খেমকারান সেক্টরের দিকে। পশ্চিম পাকিস্থানী যোদ্ধাদের ব্যাপারে সিআইএ এর পরিস্কার ধারনা থাকলেও পূর্ব পাকিস্থানের বাংগালীদের ইস্ট বেংগল রেজিমেন্টের কৌশল এবং দক্ষতা বিষয়ে স্পস্ট ধারনা ছিল না। বাংগালী ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে যুদ্ধের মোড় ঘুরে যায় এবং আইয়ুব বেঁচে যান। ব্যার্থ হয়ে যায় সিআইএ'র প্রথম ট্রাপ।
১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত ডানপন্থি পাঁচ দলের সম্মেলনে নিখিল পাকিস্থান আওয়ামীলীগের পূর্ব পাকিস্থান প্রাদেশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবর রহমান ছয় দফা উত্থাপন করেন

এই সেই ছয় দফা যা সিআইএ নির্ধারিত রাজনৈতিক চাপের ঘুটি।
পর্যালোচনা করলে দেখা যাচ্ছে 
বাংগালী ক্যাপ্টেনের পরিচালিত খেমকারান যুদ্ধের ফলে প্রথম অর্থাৎ সামরিক পদক্ষেপ ব্যার্থ না হলে দ্বিতীয় অর্থাৎ রাজনৈতিক চাপ তথা ৬ দফা উত্থাপিত হত না।
রুহুল কুদ্দুস নামের শেখ সাহেবের ইনার সার্কেলের একজন সদস্য স্বহস্তে, স্বীয় মেধাতে উল্লেখিত ছয় দফা প্রস্তুতের দাবী করলেও শেখ সাহেব নিজে কখনো রুহুল কুদ্দুসের এই দাবীকে সত্য বলে প্রত্যায়ন করেন নি। রুহুল কুদ্দুস কে এই ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান যে শেখ সাহেব অনুদার এবং দ্বৈত মানসিকতার ব্যাক্তি ছিলেন বলেই রুহুল কুদ্দুস সাহেবের কর্মের স্বীকৃতি দেন নাই।
উধাহরন হিসাবে কুদ্দুস সাহেব অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের উপমা টেনে বলেন যে পাকিস্থান থেকে ফিরে শেখ সাহেব যুদ্ধকালীন নেতাদেরকে কখনো তাদের কাজের জন্য বাহবা দেন নাই, উপরন্ত ঢাকাতে ফিরেই তিনি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট গিয়েছিলেন আটকে পড়া পাকিস্থানীদের দূর্দশা লাঘবের সান্ত্বনা দিতে। যা সেই সময় স্বদেশ পন্থীদের হতাশ করেছিল।

আইউব উৎক্ষাতে সামরিক ছক ভেস্তে যাবার পরে ছয় দফাকে সামনে আনা হয়। আদতে ৬ দফা ছিল এমন একটি ফর্মূলা যাতে পূর্ব পাকিস্থানের উপর থেকে পশ্চিম পাকিস্থানের আধিপত্যবাদের অবসান হতো এবং সুষ্ঠ ভাবে স্বায়ত্বশাষন কায়েম হত। বিচ্ছিন্নতাবাদের কোন ব্যাপার এতে ছিল না।

১৯৭০ এর নির্বাচনে ৬ দফা ছিল একটি আপসকামী ফর্মূলা। এখন অনেকে অনেক বড় বড় কথা বলেন কিন্তু আদতে ৭০ এর আগে তারা স্বাধীনতার কথা ঘুনাক্ষরেও ভাবে নায়। মার্কিনিরা ৬ দফার মত গন আকাংখিত ইস্যুকে দিয়ে শুধু আইউব উৎখ্যত করতে চেয়েছিল।

ঠিক এমন সময়েই পটভূমিতে হাজির হয় পূর্ন গঠিত ভারতীয় ইন্টেলিজেন্স ইউনিট "র"। র এর ক্যারিশমাতেই ৬ দফার মত একটি আপসকামী ফর্মূলা, আমাদের অপ্রকাশিত চাওয়া স্বাধীনতা তে রূপান্তরিত হয়। এদেশের মানুষের নিখাদ দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ, সততা, সাহসকে পর্দার অন্তরালে থেকে সুকৌশলে হাতিয়ার করে লক্ষ সিদ্ধিতে অগ্রসর হয় "র"।
১৯৫২ এর ভাষা আন্দালনের পটভূমিতে প্রথম বিকশিত হয় বাংগালী জাতিয়তাবাদ। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা প্রনয়নের মাধ্যমে শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে এই বাংগালী জাতিয়তাবাদি চেতনার শীর্ষ পুরুষ রূপে আবির্ভূত হন বটে কিন্তু একই সাথে আটকা পরেন ৬ দফার ফাঁদে
তারই নেতৃত্বের ছায়াতে নিখাত জাতিয়তাবাদি চেতনাতে ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা স্বাধীনতাপন্থীদের ১দফা দাবীর সরাসরি মুখোমুখি হন শেখ সাহেব। পয়লা মার্চ ১৯৭১ এ পাকিস্থানী প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অন্যায্য ভাবে জাতীয় পরিষদ অধিবেশনে স্থগিতাদেশ দেন। ২৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭১ এ স্থগিতাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকাতে গভর্নর জনাব আহসান এবং শেখ মুজিব বৈঠকে বসেন গভর্নর হাউজে।
আলাপ আলোচনা শেষে বেরিয়ে আসার সময় গভর্নরের সমরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলীকে বলেন

, "আমার অবস্থা দু'পাশে আগুন, মাঝখানে আমি দাঁড়িয়ে। হয় সেনা বাহিনী আমাকে মেরে ফেলবে না হয় আমার দলের ভেতরকার উগ্র চরম পন্থীরা আমাকে হত্যা করবে। কেন আপনারা আমাকে গ্রেফতার করছেন না? টেলিফোন করলেই আমি চলে আসবো"।


উল্লেখ্য শেখ মুজিব যাদের চরমপন্থী বলছেন তারাই একদফাপন্থী বা স্বাধীনতাপন্থী এবং আওয়ামীলীগের আবরনে থাকা সমাজতান্ত্রিক। এরাই নেয় সশস্ত্র সংগ্রামের প্রস্তুতি।

আজ যারা স্বাধীন বাংলাদেশে বসে দাবী করেন আওয়ামীলীগের নেতৃত্বেই সশস্ত্র সংগ্রাম হয়েছে ১৯৭১ এ, তাদের আজকের উচ্চকন্ঠ নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। কেননা আওয়ামীলীগের শ্রেণীগত চরিত্রই তাকে সশস্ত্র প্রতিরোধ সংগ্রাম থেকে বিছিন্ন করে দেয়।
সিআইএ প্রনীত আওয়ামীলীগের ৬ দফা ছিল মূলত বাংগালী উদীয়মান ধনিক শ্রেনীর সনদ। তাই আওয়ামীলীগ নেতৃত্বের রাজনীতি ছিল ৬ দফার মাধ্যমে ভোট যুদ্ধে জিতে ক্ষমতায় যাওয়া এবং সিআইএ'র জন্য ঘাড়ত্যাড়া পশ্চিম পাকিস্থানী সামরিক প্রশাসকের ক্ষমতার লাগাম দূর্বল করে দেওয়া।

১৯৭০ এর নির্বাচনের পরে আওয়ামীলীগের অভ্যন্তরে থাকা বাম ও স্বাধীনতা পন্থীরা এতটাই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে যে এদের নিয়ন্ত্রন করা খোদ মুজিবের পক্ষে অসম্ভব হয়ে ওঠে, যদিও র নিয়ন্ত্রিত কালিদাস বৈদ্য ও চিত্তরঞ্জন সুতোরের চেষ্টাতে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের যাত্রা শুরু হয় ১৯৬২ সালেই এবং এর প্রধান ছিলেন সিরাজুল আলম খান
২০১৫ সালে প্রদত্ত এক বিশেষ ইন্টারভিউ এ সিরাজুল আলম খান স্বাধীনতা, আওয়ামীলীগ প্রসংগে সদ্য প্রকাশিত মহিউদ্দিন আহমদ লিখিত ‘জাসদের উত্থান পতন : অস্থির সময়ের রাজনীতি’ গ্রন্থের ৭১ পৃষ্ঠায় বলেছেন, "আওয়ামী লীগ ছিল এন্টি-লিবারেশন ফোর্স"।

অবশ্য মুজিব বাহিনীর নেতা চতুষ্টয়ের ভেতরের বেসিক আওয়ামীলীগার শেখ ফজলুল হক মনি ও শেখ সাহেবের থার্ড ইন কমান্ড তোফায়েল আহাম্মেদ এই স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ ব্যাপারে কিছু জানতেন না। মুজিব বাহিনীর অন্যতম শীর্ষ নেতা আব্দুর রাজ্জাকের ভাষাতে শেখ মনি ও আওয়ামীলীগ নেতাদের স্বাধীনতা পরিষদের ব্যাপারে না জানার বিষয়ে বলা হয়, "না জানতেন না। জানানো হয় নি।কারন এটাতো আমাদের গোপন সংগঠন ছিল"

একই সাথে তোফায়েল আহাম্মেদ কে না জানানোর কারন হিসাবে আরো বলা হয় " তোফায়েল আহাম্মেদের ততটা পরিপক্কতা ছিল না”।


এদিকে মুক্তিযুদ্ধকালে র ও সিআইএ' এর ভূমিকা নিয়ে কাজ করা মাসুদুল হকের বক্তব্য ছিল "মনি ও তোফায়েল কে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদে নেওয়া হয়নি মতাদর্শগত কারনে, ১৯৭০ সালের আগস্ট মাসে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের প্রস্তাব দিলে শেখ মুজিবুর রহমান এর বিরোধীতা করেন। মনি ও তোফায়েল শেখ মুজিবকেই সমর্থন করেন"
১৯৬৬ সালে যখন শেখ সাহেব ৬ দফা প্রস্তাব দেন, তখনি স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ এক দফা ঠিক করেন চূড়ান্ত লক্ষ হিসাবে। অন্যদিকে আব্দুর রাজ্জাক নিশ্চিত করেন ১৯৬৯ সালে আগরতলা মামলা প্রত্যাহারের পরেই তারা শেখ মুজিবকে তাদের চিন্তাধারার কথা জানাতে যান।
১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর থেকে পূর্ব পাকিস্থান ও পশ্চিম পাকিস্থানে যথাক্রমে ভাসানী ও ভুট্টো এক যুগল গনআন্দালন শুরু করেন, এই আন্দালনেই কেপে ওঠে আইউব খানের টানা ১০ বছরের মসনদ এবং বাধ্য হয় ১৯৬৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি শেখ মুজিবকে আগরতলা মামলা থেকে মুক্তি দিতে। এর চার দিন পরে ২৬ মার্চ ১৯৬৯ এ ক্ষমতা গ্রহন করেন আরেক কুখ্যাত সেনা নায়ক আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান।

এই ঘটনার মধ্য দিয়েই সিআইএ প্রণীত ৬ দফার মাধ্যমে রাজনৈতিক চাপে দফারফা হয় আইউব খান শাষনামলের। পাকিস্থানে অনুকুল সরকার, সিআইএ এর জন্য স্বস্তির নি:শ্বাস নিয়ে আসে।
  1. ১৯৬৮ সালের ৬ ডিসেম্বর মাওলানা ভাসানী পল্টন ময়দানে স্বাধীন পূর্ব বাংলার কথা বলেন। 
  2. এর আগে ১ ডিসেম্বর ১৯৬৮ সালে স্বাধীনতার আহ্বান সম্বলিত থিসিস প্রকাশ করে সিরাজ শিকদারের পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি।
  3. ১৯৬৯ সালে এপ্রিলে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টির অভ্যন্তরের হায়দার আকবর খান রনো, কাজী জাফর আহাম্মেদ ও রাসেদ খান মেননের কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলা সমন্বয় কমিটি স্বাধীন পূর্ব বাংলার কর্মসূচী প্রচার করে।

১৯৬৯ সালের ২৮ নভেম্বর নতুন সামরিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া নয়া জাতীয় নির্বাচনের ঘোষনা দেন ১৯৭০ সালের ৫ অক্টোবর, পরে অবশ্য ৭ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারিত হয়। এই নির্বাচন বানচালের লক্ষে ১৯৭০ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি পূর্ব পাকিস্থান ছাত্র ইউনিয়ন স্বাধীন জনতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা প্রতিষ্ঠার লক্ষে ১১ দফার কর্মসূচি প্রদান করে।
এই কর্মসূচি কে কেন্দ্র করে সামরিক আদালত কাজী জাফর, মেনন এবং জামাল হায়দার ও মাহাবুব উল্লাকে যথাক্রমে ৭ ও ১ বছরের কারাদণ্ড প্রদান করে।
জাতীয় নির্বাচনের মাঠে তখন একছত্র অধিপতি আওয়ামীলীগ। নির্বাচনী প্রস্তুতির চরম পর্যায়ে ২৫ অগাস্ট ইয়াহিয়া সরকার ঘোষণা দেয় ৭ ডিসেম্বর, নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হল। ইয়াহিয়ার এই ঘোষনার ঠিক তিন দিন আগে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি নেয় এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।তারা কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে স্বাধীন সমাজতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রস্তাব পাস করিয়ে নেয়।

ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন শেখ মুজিব।স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদের নেতা আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে শেখ মুজিব এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে তার আপত্তির কথা জানিয়ে দেন।প্রস্তাব গ্রহণকারীদের প্রতি তিনি রীতিমত রুষ্ট হন।
১২ ডিসেম্বর ১৯৭০ দক্ষিণ বাংলার ওপর দিয়ে বয়ে যায় বিভীষণ ঘূর্ণিঝড়। তিল লাখ মানুষ প্রান হারায়, অথচ নির্লিপ্ততা দেখায় ইয়াহিয়া প্রশাষন। ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ভাষানী।
তিনি ঘোষণা দেন পাকিস্থানী সার্বভৌমত্তের বিপক্ষে।পশ্চিম ও পূর্ব দুই স্থানেই নির্বাচন পিছিয়ে দেবার দাবী ওঠে। এর ভেতরেই ঢাকা আসেন ইয়াহিয়া খান এবং তিনটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক হয় ইয়াহিয়া-মুজিব জুটির। আসুন সেই বৈঠকের শানেনজুল জানা যাক ইয়াহিয়ার যোগাযোগ মন্ত্রী জি ডাব্লিউ চৌধুরীর জবানীতে।
"নভেম্বরে হালকা শীতের আমেজ ও উৎফুল্ল চিত্ত" তিনি বলেন।


নির্বাচনের তারিখ (৭ তারিখ) অপরিবর্তিত থাকে এবং ইয়াহিয়া জানান এই তারিখ ঠিক রাখার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল, যথারীতি কার্য সম্পাদন হয়ে যায় এবং আওয়ামীলীগ পেয়ে যায় বিপুল গরিষ্ঠতা। নির্বাচনের দুদিন আগে মাওলানা ভাষানী পল্টন থেকে আহবান জানান
"মুজিব তুমি স্বাধীন পূর্ব পাকিস্থান সংগ্রামে যোগ দাও।যদি আমেরিকা ও ইয়াহিয়ার স্বার্থে কাজ কর তাহলে আওয়ামীলীগের কবর ৭০ সালেই অনিবার্য "

৩ তারিখ ইয়াহিয়া রাওয়ালপিন্ডি পৌঁছান এবং খবর আসে যে ইয়াহিয়ার সফর সংগী চিফ অফ জেনারেল স্টাফ জেনারেল আব্দুল হামিদ ইয়াহিয়ার সকল ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়েছেন এবং ইয়াহিয়া এখন পুতুল প্রধান
১ মার্চ ৭১, ইয়াহিয়া জাতিয় পরিষদ অধিবেশন স্থগিত করেন তার পরিষদের চাপে। কিন্তু ইয়াহিয়ার এই পতনের কথা বিশ্বাস করেনি আওয়ামীলীগ তাই নির্বাচনের পরেও ইয়াহিয়াকে প্রেসিডেন্ট করার আশ্বাস আসে আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে।
আওয়ামীলীগের এই ভূমিধ্বস বিজয়ে হতভম্ভ হয়ে যায় জান্তা, তারা ছক কষতে থাকে ষড়যন্ত্রের। পায়তারা করা এক বিষয় আর প্রয়োগ ভিন্ন বিষয়। এর সংগে জড়িত অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বিপুল ঝুঁকি।

ভুট্টোর আশির্বাদে সেই ঝুঁকি নেয় জান্তা, ভুট্টো প্রকাশ্য জনসভাতে ক্ষমতাতে আওয়ামীলীগকে মানতে অস্বীকার করে এবং নিজে ক্ষমতা গ্রহনের খায়েশ ব্যাক্ত করে।সারা পাকিস্থান জুরে রাজ্যের স্থবিরতা নেমে আসে, অজানা আশংকা ভর করে। সামরিক ও বেসামরিক বাংগালী ইউনিট থেকে সম্ভাব্য আক্রমনের আভাষ দেওয়া হয় মুজিবকে।

এই প্রেক্ষিতে ৩ জানুয়ারি রেসকোর্সে নব নির্বাচিত জাতীয় পরিষদ সদস্য ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে নির্বাচন সুসম্পন্ন করাতে প্রেসিডেন্ট কে ধন্যবাদ জানান মুজিব "তার অধঃস্থনদের একটি অংশ সক্রিয় যারা, এখনো নির্বাচনী ফলাফলকে উলটে দেবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত" বলেন মুজিব।

২০ ডিসেম্বরের ভূট্টোর ঘোষনাতে যে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয় তা উত্তরনে ১২ জানুয়ারি ঢাকা আসেন ইয়াহিয়া। মোহাম্মদ আজগর তার "জেনারেলস ইন পলিটিক্স " গ্রন্থে লিখেছেন, “আলোচনার এক পর্যায়ে মুজিব ইয়াহিয়াকে বলেন নতুন শাষন তন্ত্র রচনার পরে তারা আপনাকে প্রেসিডেন্ট করতে চাই।“
“কেন আপনারা আমাকে প্রেসিডেন্ট করতে চান?” ইয়াহিয়া প্রশ্ন রাখেন।

মুজিবের ব্যাখ্যা। (এদেশি ইতিহাসে রাজনীতিবিদের হাত দিয়ে সামরিক বাহিনীকে রাজনীতিতে পুনরায় টেনে আনার প্রথম উদাহরন)


এর পরেই ইয়াহিয়া ঘোষনা দেন, "শেখ মুজিব দেশের ভবিষ্যৎ প্রধান মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন"।

উল্লেখ্য পাকিস্তান ও ইন্ডিয়াকে সম্মুখ যুদ্ধে দাড় করিয়েও আইয়ব কে নামাতে ব্যার্থ হয় সিআইএ। এই ব্যার্থতার ফলশ্রুতিতেই আসে ৬ দফা।আইয়ব পতনের মাধ্যমে ৬ দফার প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় মার্কিন প্রশাষনের কাছে।কিন্তু ইতিহাসের প্রয়োজনেই ততদিনে ৬ দফা থেকে স্বাধীনতার একদফার আশা বুকে বেঁধে নিয়েছে বাংলাদেশের মানুষ।
অন্যদিকে ৬ দফাকে কেন্দ্র করে ১দফার যে কৌশল নিয়েছিল "র" ; 

পশ্চিম পাকিস্থানীদের লুন্ঠন, বৈষম্য,, বঞ্চনা, দমন পীড়নে সেই একদফা পুষ্ট হয়ে ওঠে। বাংগালীর বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নে ইন্ডিয়া ইন্ডিয়া শুধুমাত্র একটি পার্শ্বচরিত্রে পরিনত হয়।
জন মানুষের অন্তরে যখন মুক্তির গান বেজে ওঠে তখন সেই সুরের স্রোতকে রুখবে, সাধ্যকার??
সহায়ক বই এবং নথি



  1. US Dipartment of state এর আর্কাইভ দেখুন বিস্তারিত চিঠি ও অন্যান্য ডকুমেন্ট দেখার জন্য
  2. তাদের ওয়েব সাইট 
  3. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ র ও সিআইএ গ্রন্থ মাসুদুল হকের লেখা
  4. Last days of united Pakisthan by G.W.Chowdhuri
  5. Friends, not masters by Ayub Khan
  6. দৈনিক সংবাদ ৫ জানুয়ারি ১৯৬৮
  7. প্রাগুক্ত ৯ জানুয়ারি ১৯৬৯
  8. বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র
  9. Bangladesh documents
  10. Generals in politics by Azgor Khan
  11. Jack Anderson’s papers by Jack Andersom

Tuesday, January 12, 2016

বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রীয় ডকুমেন্ট

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সিল

আলুর তৈরী সিল!

বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রীয় ডকুমেন্ট।



চুয়াডাঙ্গা'র ড. আশাবুল হকের সাক্ষর এবং এন এন সাহা'র আলুর তৈরি সিলে বাংলাদেশের প্রথম ভিসা।

ফ্রান্সের ফিলিপ মার্ক এডওয়ার্ড আলফনসিঁ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সংবাদ সংগ্রহে আসেন ১৯৭১ সালের ৩রা এপ্রিল। সাথে ছিল এক ঝাঁক জীবন বাজী রাখা সাংবাদিক যারা বহির্বিশ্বে তুলে ধরেছিলেন আমাদের অবস্থা। তখনো শপথ নেয় নাই মুজিব নগর অস্থায়ী সরকার।
ছবি 





একটি দেশের নাগরিকদের অন্য দেশে ঢুকতে ভিসা লাগে। সাংবাদিকরা ঢুকবে কিভাবে?
বাংলাদেশ নব জন্মা একটা দেশ যা তখনোও স্বাধীন হয় নাই তাই বলে নিয়মের হেরফের হবে কেন ???


সিল তৈরি হয়ে গেলো আলু দিয়ে।




গোল সিলের চারপাশে বৃত্তাকারে 'দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় কমান্ড, চুয়াডাঙ্গা' লেখা।
মাঝে বাংলাদেশের মানচিত্রের জমিনে লেখা 'বাংলাদেশ'। পাশে আঞ্চলিক কমান্ডার ড. আসহাবুল হকের স্বাক্ষর।
নিচে বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস লেখা আরেকটি সিল রয়েছে।
১৯৭১ সালের ৩ এপ্রিল 'অন অ্যারাইভাল এই ভিসাটি' দেয়া হয়েছে, যার ১৪ দিন পর শপথ নিয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার।
পাসপোর্টে সিলের ছবি





বাংলাদেশের মানুষ তখনি বুঝতে পেরেছিল, নিজ দেশের সব কাজ নিজ হাতে করার সময় এসেছে। বিদেশী পাসপোর্টে সিল দেয়া সেটাই প্রমাণ করে। পাকিস্তানিদের আকাঙ্ক্ষা ছিলো শক্তি দিয়ে জয়ী হওয়া। যখন যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশির ভাগ পশ্চিমা দেশ পাকিস্তানকে সমর্থন করছিল, ওই অবস্থায় স্বাধীনতার দাবিতে দৃঢ় এই বাংলাদেশী যোদ্ধারা ভিনদেশী পাসপোর্টে বাংলাদেশের প্রথম অফিসিয়াল সিল দেয়।





Monday, January 11, 2016

রাষ্ট্রপতি জিয়া হত্যা ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া ১ম পর্ব


ব্যক্তি কখনো ইতিহাসের একটি বা একাধিক পঙক্তি, পৃষ্ঠা বা অধ্যায় হয়ে ওঠেন, কখনো গোটা ইতিহাস হয়ে ওঠেন। 

যিনি জাতির উত্থান-পতনের সুখ-দুঃখে মিশে গিয়ে নিজের সুখ-দুঃখ, উত্থান-পতন, জীবন-মৃত্যুকে এই ইতিহাসের ধারায় সমার্পিত করেন তিনিই হয়ে উঠেন ইতিহাসের মানসপুত্র । হ্যাঁ আমি বাংলাদেশের ইতিহাসের মা্নসপুত্র শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর কথা বলছি ।


১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে শহীদ হন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম। শোকাবহ ৩০শে মে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ বর্বর ও কাপুরোচিত হত্যাকান্ড নিয়ে সে সময় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও প্রচার মাধ্যম থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন মন্তব্য ও প্রতিবেদনের মাধ্যমে যে প্রতিক্রিয়া জানানো হয়, তা আর একবার স্মরণ করছি ...

৩১ মে, ১৯৮১ তে The Pittsburgh Press "Bangladesh Poor Lose A 'Champion' "




শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশ করে; আর তাতে জিয়ার মৃত্যুর ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরা হয়। সেই সাথে জিয়াউর রহমানের শাসনামলের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। দেশকে এগিয়ে নিতে জিয়াউর রহমানের আত্ম-নিয়োগ করার মনোভাব বারবার উল্লেখ করা হয় সংবাদটিতে।


"বাংলাদেশ এমন একজন নেতাকে হারিয়েছে যিনি ই সর্বপ্রথম বাংলাদেশকে স্থিতিশীল এবং উন্নয়নমূলক রাজনীতি দিতে সক্ষম হয়েছেন।"

তাঁর ব্যাপক জনপ্রিয়তা সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত ভঙ্গিমায় উল্লেখ করা হয়েছেঃ “তিনি বহুল মাত্রায় জনপ্রিয় ছিলেন, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে। আর এখানকার মানুষদের অবস্থার পরিবর্তনের জন্য সকল চেষ্টায় তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।"
গ্রামের মানুষের জিয়ার প্রতি এতো ভালোবাসার কারণও ঠিক পরের লাইনে জিয়ার উদ্যোগগুলোকে ফুটিয়ে তোলার মাধ্যমে স্পষ্ট করা হয়েছেঃ " বাংলাদেশে কৃষি বিপ্লব ঘটানোর দিকেই জিয়া দৃষ্টি নিবন্ধন করেছিলেন আর এর জন্য সার, কীটনাশক, উন্নতমানের বীজ ব্যবহারের মাত্রা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। বিশেষ করে সেচ প্রকল্পের জন্য তিনি সারাদেশব্যাপী খাল খনন কর্মসূচী চালু করেছিলেন। "
ঐ দিনের The Pittsburgh Press পত্রিকা দেখতে ঃ https://goo.gl/4qumlW


জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ক্ষনজন্মা রাষ্ট্রনায়ক। নানা কারণে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে স্থান করে নিয়েছেন। তার সততা, নিষ্ঠা, গভীর দেশপ্রেম,পরিশ্রম প্রিয়তা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণাবলি এ দেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল। তিনি ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের কাছে তার যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল অন্য কোনো রাষ্ট্রনায়কের ভাগ্যে তা জোটেনি। মাত্র ছয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। কিন্তু সাধারণ মানুষ তার ওপর ছিল প্রচণ্ড আস্থাশীল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তার ওপর মানুষের এই আস্থায় কোনো চিড় ধরেনি।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রূহের মাগফিরাত কামনা করছি ।।

আরো দেখুন আমাদের ফেসবুক পেজে 

https://www.facebook.com/413574455508462/photos/a.413593855506522.1073741828.413574455508462/431291843736723/?type=3&theater